কুণ্ডুলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর গুরুত্ব ।


আমরা প্রত্যেকেই কোন না কোন লগ্ন এবং রাশি  নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছি । কারো জীবনই সর্বাঙ্গ সুন্দর বা দুঃখ বিহীন যে এমন  নয় । লগ্ন বা র রাশিই যাই হোক রাশি চক্রের এক বা একাধিক ঘর আমাদের জীবনে সমস্যার কারণ হয়  । 

যে ঘর বেশী পীড়িত বা পাপ প্রভাবযুক্ত হয়,সেই ঘর আমাদের জন্য অধিক পীড়াদায়ক হয় । তবে বিশেষত ষষ্ঠ,অষ্টম এবং দ্বাদশ ঘরকে   নেতিবাচক ভাব  হিসাবে দেখা হয় । উক্ত ভাবগুলির সাথে যদি কোন শুভ ভাবের সম্পর্ক তৈরী হয়,তাহলে সেই শুভ ভাবের  মধ্যেও জটিলতা সৃষ্টি হয়।শুভ ভাবগুলির সাথে অশুভ ভাবগুলির দৃষ্টি-জ্যোতি সহ বিশেষ কোন ধরনের সম্পর্ক স্থাপন না হলেও  শুভ ভাবগুলি থেকে  আমরা  আশানারূপ শুভ ফল পাই না ।

যদি আমরা কারণ অনুসন্ধানে যাই,তাহলে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর নেগেটিভ ঘরগুলি আমাদের কুণ্ডুলীর কোন কোন ঘরে স্থান পেয়েছে,সেটা দেখা সর্বাগ্রে প্রয়োজন । অর্থ্যাৎ  কালপুরুষের কুণ্ডুলীর  ষষ্ঠ,অষ্টম এবং দ্বাদশ ঘর আমাদের কুণ্ডুলীর কোন কোন ঘরে স্থান পেয়েছে,সেই দিকে যদি আমরা নজর দেই,তাহলে আমার আমাদের প্রশ্নের উত্তর পেতে পারি।

কালপুরুষের নেগেটিভ ঘরগুলি  আমাদের কুণ্ডুলীর যে যে ঘরে স্থান পায় ,সেইসব ঘরগুলি থেকে শুভফল পেতে গিয়ে আমাদেরকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।আমাদের কুণ্ডুলীর শুভঘর হলেও সমস্যা হয়।যদি কালপুরুষের নেগেটিভ ভাবযুক্ত সেই ঘরের শুভফল লাভ করার উপযুক্ত পথে না চলা যায় ।

উদাহরণ হিসাবে বৃষ লগ্ন বা রাশির পঞ্চম ঘরের রাশি হল কন্যা রাশি । যে কন্যা রাশি থেকে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর ষষ্ঠঘরের বিচার করা হয় । বৃষ লগ্ন বা রাশির অধিকারীদের  তাদের পঞ্চম ঘরের বিষয়গুলি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে দেখা যায় ।যদি না তারা কন্যা রাশি থেকে লাভ প্রাপ্তির উপযুক্ত নিয়মাবলী মেনে না চলেন ।শিক্ষা,সন্তান,প্রেম সম্পর্ক ইত্যাদিতে বাধার সম্মুখীন হতে দেখা যায় ।

কালপুরুষের ষষ্ঠ ঘরের বা কন্যা রাশির নেতিবাচক প্রভাব দূর করার উপযুক্ত উপায় হল শৃঙ্খলা মেনে কর্ম করা এবং কর্মক্ষেত্রে উপযুক্ত মনোনিবেশ করা ।কন্যা রাশির যে কোন কর্ম ক্ষেত্রে যদি  শৃঙ্খলা বা ডিসিপ্লিনকে সঠিক ভাবে গুরুত্ব না দিয়ে চলা হয় এবং কর্মক্ষেত্রে সঠিকভাবে মনোযোগী না হয় ,তবেই সমস্যা তৈরী হয় । আর যদি সঠিক মনযোগ এবং ডিসিপ্লিনের মধ্যে দিয়ে কর্ম করা হয়,তাহলে কোন সমস্যা উৎপন্ন হয় ।বৃষ লগ্ন বা রাশির অধিকারীরা যদি তাদের ষষ্ঠ ভাবের কর্মক্ষেত্রে মনযোগ সহকারে  ডিসিপ্লিন মেনে কর্ম করেন,তাহলে তাদের ষষ্ঠভাবের বিষয়গুলি তাদের জন্য সমস্যা  উৎপন্ন করে না ।

তেমনি যদি আমরা কর্কট লগ্ন বা রাশির পঞ্চম ঘরের বিচার করি,তাহলে উক্ত লগ্ন বা রাশির পঞ্চম ঘরের রাশি হল বৃশ্চিক রাশি ।যা কালপুরুষের অষ্টম ঘরের রাশি ।যে রাশি থেকে কালপুরুষের দুঃখ,কষ্ট,যন্ত্রণা,মৃত্যু বা মৃত্যুতুল্য কষ্ট এবং গুপ্তবিদ্যা,গুপ্তধনের বিচার করা হয় ।

কালপুরুষের অষ্টম ঘর কর্কট লগ্ন বা রাশির পঞ্চম তথা জ্ঞান,শিক্ষা,সন্তান,রোমান্স বা প্রেম-সম্পর্ক বা বিনোদনের ঘরে অবস্থান । কালপুরুষের অষ্টম ঘর কর্কট লগ্ন বা রাশির পঞ্চম ঘরে অবস্থান করায়,পঞ্চম ঘরের বিষয়গুলির করণীয় কর্ম নিয়ে উক্ত লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকাদের মধ্যে একটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভাব বা  কনফিউশন কাজ করে । যদি  না তারা তাদের পঞ্চম ঘরের যে কোন বিষয়ের কর্মক্ষেত্রে সঠিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ না করেন ।

কালপুরুষের অষ্টম ঘর বা বৃশ্চিক রাশি যে কোন কুণ্ডুলীর যে ঘরে অবস্থান করে,সেই কুণ্ডুলী ধারকের সেই ঘরের বিষয় গুলির করণীয় কর্মের ক্ষেত্রে উপযুক্ত বিচার বিশ্লেষণ করে কর্ম করতে হয় । না হলে বৃশ্চিক রাশির নেগেটিভ ফলের প্রাপ্তি হয় । তথা দুঃখ,কষ্ট ,যন্ত্রণা,মৃত্যু বা মৃত্যুতুল্য কষ্টের মত ফলের প্রাপ্তি হয় ।আর সঠিকভাবে বিচারের মধ্যে দিয়ে কর্ম করলে বৃশ্চিক রাশির পজেটিভ ফল লাভ হয় ।তথা গুপ্তধন,গুপ্তবিদ্যার মত ফলের প্রাপ্তি হয় ।

কর্কট লগ্ন বা রাশির অধিকারীদের  তাদের পঞ্চম ঘরের করণীয় কর্মের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে বিচার করে সিদ্ধান্ত নিতে হয় । অর্থ্যাৎ তাদের জ্ঞান,শিক্ষা,সন্তান,প্রেম-সম্পর্ক ইত্যাদি ক্ষেত্রে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে বা কর্ম করার পূর্বে সঠিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হয় । তাতে তারা কালপুরুষের অষ্টম ঘরের বা  বৃশ্চিক রাশির শুভফল লাভ করতে পারেন ।আর যদি সঠিকভাবে বিচার না করে সিদ্ধান্ত নেন,তাহলে কালপুরুষের অষ্টম ঘরের বা  বৃশ্চিক রাশির  অশুভফল ফলের প্রাপ্তি হয় ।

কালপুরুষের অষ্টম ঘর বা বৃশ্চিক রাশি থেকে  অত্যাধিক নেগেটিভ যেমন মৃত্যু বা মৃত্যুতুল্য কষ্টের মত বিষয়ের বিচার করা হয় । আবার অত্যাধিক পজেটিভ যেমন গুপ্তধন, গুপ্তবিদ্যার মত বিষয়েরও বিচার করা হয় ।অতএব কালপুরুষের অষ্টম ঘরকে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘর বলা যায়।

আমরা জানি যে অন্ধকার থেকে বের হবার বা অন্ধকারে কোন কিছু খুঁজে বের করার  একমাত্র মাধ্যম হল আলো । তেমনি বৃশ্চিক রাশি থেকে লাভ প্রাপ্তির উপায় হল জ্ঞানের সঠিক ব্যবহার । জ্ঞানের সঠিক ব্যবহারের মধ্যে দিয়েই কালপুরুষের অষ্টম ঘরের বা বৃশ্চিক রাশির শুভফল পাওয়া যায় । 

অতএব কুণ্ডুলী বিশেষণে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর বিচার করা অতি আবশ্যক ।কালপুরুষের কুণ্ডুলীর নেগেটিভ ঘরগুলি যে কোন কুণ্ডুলীর যে ঘরে অবস্থান করে,সেই কুণ্ডুলী ধারকের সেই ঘরগুলি নিয়ে সবেদনশীল থাকা প্রয়োজন ।সেই ঘরগুলি থেকে যে পথে চললে শুভফল পাওয়া যায়,সেই পথে চলা উচিত ।

তাতে জীবনের বিভিন্ন সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠা যায় এবং  সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে জীবন অতিবাহিত করা যায়।

আরো পড়ুন