যে কোন কুণ্ডুলীর অষ্টম ঘর থেকে সেই কুণ্ডুলী ধারকের নেগেটিভ হিসাবে দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা,মৃত্যু বা মৃত্যুতুল্য কষ্টের বিচার করা হয় ।আর পজেটিভ হিসাবে গুপ্তবিদ্যা,গুপ্তধন,গুপ্তরহস্য,অনুসন্ধান বা খোঁজ,শ্বশুরবাড়ি বা জীবনসঙ্গীর ধন-পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনের বিচার করা হয় । আমরা জানি যে সপ্তম ঘর থেকে জীবনসঙ্গী বা পার্টনার,ব্যবসা-বাণিজ্যের বিচার করা হয়ে থাকে।সেই সঙ্গে সপ্তম ঘর থেকে আমাদের সামনের সেই সব ব্যক্তিরও বিচার করা হয়ে থাকে,যাদের সাথে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন প্রকারের আদান:প্রদান করি ।আর অষ্টম ঘর থেকে সেই সব ব্যক্তিরও ধন-পরিবার,আত্মীয়-স্বজনের বিচার করা হয়,যাদের সাথে আমরা দৈনন্দিন জীবনের আদান-প্রদান বা লেনদেন করি । যেভাবে লগ্নের বৈশিষ্ট্য ভালো-মন্দ বজায় থাকা নির্ভর করে লগ্নের বিপরীত ঘরের সাথে ভালো-মন্দ সম্পর্ক বজায় রাখার উপর,তেমনি আমাদের দ্বিতীয় ঘরের বা ধন-পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনের ঘরের ভালো-মন্দ বজায় থাকা নির্ভর করে আমাদের অষ্টম ঘরের তথা আমাদের জীবনসঙ্গীর,বা পার্টনারের বা সামনের ব্যক্তির(যাদের সাথে আমরা দৈনন্দিন জীবনের লে
যে কোন কুণ্ডুলীর সপ্তম ঘর থেকে সেই কুণ্ডুলী আধিকারিকের জীবন সঙ্গী,পার্টনার এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের বিচার করা হয় ।সেই সাথে সপ্তম ঘর যেহেতু আমাদের লগ্ন বা রাশির বিপরীত ঘর অতএব আমাদের বিপরীতের প্রত্যেক ব্যক্তি,যাদের সাথে আমরা দৈনন্দিন বিভিন্ন লেনদেন করি,তাদের বিচারও সপ্তম ঘর থেকে করা হয় ।
সপ্তম ঘরের রাশি, রাশির অধিপতি গ্রহ এবং বিবাহ কারক শুক্র, গুরুর বলাবলের উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয় যে কোন ব্যক্তির বিবাহিত জীবনের ভাগ্য। যদি সপ্তম ঘর,সপ্তম ঘরের অধিপতি এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে বিবাহ কারক গ্রহ শুক্র এবং স্ত্রীদের ক্ষেত্রে বিবাহ কারক গুরু শুভ গ্রহের প্রভাব যুক্ত হয়,তাহলে ব্যক্তির বিবাহিত জীবন সুন্দর এবং মসৃণ হয় ।আর যদি সপ্তম ঘর,সপ্তম ঘরের অধিপতি এবং বিবাহ কারক গুরু,শুক্র অশুভ প্রভাব যুক্ত হয়,তাহলে বিবাহিত জীবনে বিভিন্ন সমস্যা দেখতে পাওয়া যায় ।
যাই হোক এ পৃথিবীতে সমস্যা যেমন রয়েছে , সব সমস্যার সমাধানও অবশ্যই রয়েছে ।বিবাহ স্থানে ক্রুর গ্রহের অবস্থানে বিবাহিত জীবনে বিভিন্ন সমস্যা উৎপন্ন হলে,সেই মত ব্যবস্থা নিলে বা সেই গ্রহের বিশেষত্বকে বুজে সেই মত চললে,সেই গ্রহের অশুভ ফলের বদলে শুভ ফলের প্রাপ্তিও হয়।যে কোন গ্রহ অশুভ ফল তখন প্রদান করে,যদি আমরা সেই গ্রহের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত হয়ে না চলি ।
মঙ্গল গ্রহ একটি অগ্নি তত্ত্ব গ্রহ। কালপুরুষের কুণ্ডুলীর হিসাব অনুযায়ী মঙ্গল কালপুরুষের প্রথম ও অষ্টম ঘরের অধিপতি ।অর্থাৎ মঙ্গলের মেষ রাশি থেকে কালপুরুষের শরীর-স্বাস্থ্য,মন-মানুষিকতা বা ব্যক্তিত্ব এবং বৃশ্চিক রাশি থেকে নেগেটিভ হিসাবে দুঃখ,কষ্ট,যন্ত্রণা এবং পজেটিভ হিসাবে গুপ্তবিদ্যা,গুপ্তধন বা গুপ্ত রহস্যের মত বিষয়ের বিচার করা হয় ।
আমাদের কুণ্ডুলীর সপ্তম ঘরে বা যে কোন ঘরে যদি মঙ্গল অবস্থান করেন,আর আমরা যদি মঙ্গলের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত হয়ে না চলি,তবেই মঙ্গল আমাদেরকে অশুভ ফল প্রদান করেন ।আর যদি মঙ্গলের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত হয়ে চলি বা কর্ম করি,তাহলে কেনই বা মঙ্গল আমাদেরকে অশুভ ফল প্রদান করবেন ।আমাদের জীবনে যা কিছুই প্রাপ্তি হয়, সবই আমাদের কর্মের ফল স্বরুপ প্রাপ্তি হয় । যদি আমাদের কর্ম শুভ হয়,তাহলে ফল শুভ হয় ।আর যদি শুভ কর্ম না হয়,তাহলে ফলও শুভ হয় না ।অর্থাৎ আমরা যেমন কর্ম করি,তেমন ফল পাই ।মঙ্গল দেবও আমাদেরকে আমাদের কর্মের বাইরে একবিন্দুও কোন কিছু প্রদান করেন না ।উনি আমাদেরকে আমাদের নির্দিষ্ট কর্মের নির্দিষ্ট ফলই প্রদান করেন। উনি আমাদের কখনই শত্রু ভাবেন না যে আমরা শুভ কর্ম করলে অশুভ ফল প্রদান করবেন ।
সপ্তম ঘরে মঙ্গল অবস্থান করলে সপ্তম ঘরের প্রত্যেকটি কর্মের ক্ষেত্রে মঙ্গলের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত হয়ে কর্ম করতে হয়।কুণ্ডুলীতে মঙ্গল অশুভ প্রভাবযুক্ত হোক বা নাই হোক,মঙ্গলের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত হয়ে চললে বা মেনে চললে মঙ্গল কখনই অশুভ ফল প্রদান করেন না । আর যদি মঙ্গলের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত হয়ে না চলা হয় ,তবেই অশুভ ফলের প্রাপ্তি হয় ।অর্থাৎ বিবাহিত জীবনে নানান সমস্যা,দুঃখ,কষ্ট,যন্ত্রণা পেতে হয় । সপ্তম ঘরে অবস্থান করা মঙ্গলের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত হয়ে চললে বিবাহিত জীবন চলে সুন্দর এবং মসৃণভাবে ।
মঙ্গলের বৈশিষ্ট্যের সাথে যুক্ত হয়ে চলা কথার অর্থ হল -- মঙ্গল ডিসিপ্লিনের কারক গ্রহ। পৌরাণিক কথামতেও মঙ্গল সূর্যের দেবের রাজদরবারের সেনাপতি ।স্বভাবতই সেনাপতি সর্বদা ডিসিপ্লিনকে মহত্ব দেন । মঙ্গল আমাদের কুণ্ডুলীর সপ্তম ঘরে অবস্থান করলে আমাদেরও সপ্তম ঘরের কর্মক্ষেত্রে ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হয় বা ডিসিপ্লিন মেনে কর্ম করতে হয় । সময়ের কাজ সময়ে করতে হয় ।সময়ে গুমানো,সময়ে জাগা ।সকালের কাজ সকালে করা,সকালের কাজ বিকানের জন্য না রাখা।
বিবাহিত জীবনের কর্ম হোক বা যে কোন কারো সাথে যে কোন ধরনের লেনদেন সর্বক্ষেত্রে মঙ্গল সপ্তম ঘরে অবস্থানরত কুণ্ডুলী ধারকদের ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করে চলতে হয় এবং সপ্তম ঘরের কর্মক্ষেত্রে ধর্ম,ন্যায় নীতি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হয় এবং যে কোন কর্মক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই করে কর্ম করতে হয় ।
যদি মঙ্গল কুণ্ডুলীতে অধিক অশুভ প্রভাব যুক্ত হয় এবং রাগের কারণে বিবাহিত জীবনে অধিক সমস্যা অনুভূত হয় বা অন্যান্য সমস্যা দেখা যায় তাহলে আমিষ জাতীয়,নেশাজাতীয় খাবার ত্যাগ করা এবং নিরামিষ ভোজন করা শুভফল দায়ী হয় ।
সপ্তম ঘরে মঙ্গল অবস্থানরত কুণ্ডুলীর অধিকারীরা যদি উপরিউক্ত বিষয়গুলি মেনে সপ্তম ঘরের কর্ম করেন ,তাহলে শুভ প্রভাবযুক্ত হোক বা অশুভ প্রভাবযুক্ত হোক মঙ্গল আপনাদের সপ্তম ঘরের ক্ষেত্রে বা বিবাহিত জীবনের ক্ষেত্রে কখনই কষ্ট দায়ী হবে না । বরং সপ্তম ঘরের কর্মক্ষেত্রে ডিসিপ্লিন মেনে চলার কারণে বিবাহিত জীবনের মধ্যে দিয়ে করতে পারবেন জীবনে উন্নতি ।
- আরো পড়ুন
- সপ্তম ঘরে শনির অবস্থান ও শুভফল লাভের উপায়
- কর্মের গঠনে ধর্মের অবদান ।
- লগ্ন ও রাশিতে শনির অবস্থান ও শুভফল বৃদ্ধির উপায় ।
- লগ্ন বা রাশিতে সূর্যের অবস্থান এবং শুভ ফল বৃদ্ধির উপায়
- ধন আগমনের সময় কাল
- সপ্তম ঘরে কেতুর অবস্থান ও শুভফল পাওয়ার উপায় ।
- লগ্নে ও রাশিতে কেতুর অবস্থান ও শুভফল লাভের উপায়
- সপ্তম ঘরে গুরুর অবস্থান ও শুভফল লাভের উপায়
- রাহুর দশায় শুভফল পাওয়ার উপায়
- চতুর্থ ঘরে গুরুর অবস্থান ও শুভফল লাভের উপায়
- চতুর্থ ঘরে শনির অবস্থান ও শুভফল প্রাপ্তির উপায়
Comments
Post a Comment